আমার ছেলেবেলা অথবা সোনালীবেলা, আর আমার মা

ছোটবেলা অকাম-কুকাম করার পর মা আমাকে যেইসব শাস্তি দিতেন, তাঁর মধ্যে প্রধান শাস্তি হলো কান ধরে টেনে আমাকে একহাত উপরে তুলে ফেলার চেষ্টা আর পিঠের ওপর ধুরুম-ধারুম কিল। নাওয়া নাই খাওয়া নাই, সারাদিন ঘুড়ি আর লাটিম নিয়ে সারা গ্রাম ছুটে বেড়ানো, তারপর সন্ধ্যায় বাড়িতে ফেরা, এইটা ছিলো আমার সাপ্তাহিক অভ্যাস। মানে প্রতি সপ্তাহে অন্তত একবার, একদিনের জন্য হলেও উধাও হয়ে যেতাম আমার ঘুড়ি অথবা লাটিমকে সঙ্গে নিয়ে।

ছোটগল্প : স্বপ্ন বাসর

বড় বোনের শখ করে কেনা মোটা-সোটা বড় ফুলের টবটা আছাড় মেরে ভেঙ্গে ফেললাম। আরও কিছু ভাঙতে মন চাচ্ছে। হাতের কাছে টিভি ছাড়া ভাঙার মত আর কিছুই পেলাম না। মা চোখ বড়বড় করে, মুখ কটমট করে দরজার সামনে দাঁড়িয়ে আছে। আমি কিছু তোয়াক্কা না করে ধবধবে সাদা শার্টটা গায়ে দিলাম। টাউজারটা চেঞ্জ করে অভির দেয়া জিন্সটা পরলাম। বন্ধু অভি গত সপ্তাহে সাদা শার্ট আর প্যান্টটা গিফট করেছে তার বিবাহের এক বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে। বিবাহ বার্ষিকী উপলক্ষ্যে যদিও উপহার দেয়ার কথা আমার, তবে অভিই আমাকে উল্টো উপহার দিয়েছে।

ছোটগল্প : অনিলা

অনিলা। আমার গার্লফ্রেন্ড। ওদের বাসায় আমি কখনই তেমন একটা যাইনা। কোন রাগ-অভিমানের কারনে নয়। যাইনা যাইনা। কোন কারন নেই। গতকালও যেতাম না, যদি না ওর মা ফোন দিয়ে এতটা জোড়াজুড়ি করতো। আন্টিকে ছুতো দিয়েছিলাম, “আমি আমার খালার বাসায় আসছি। বাসায় ফিরতে সন্ধ্যা হয়ে যাবে। আজকে তো আসতে পারবো না আন্টি।” আন্টি প্রতি উত্তরে বললেন, “ঠিক আছে বাবা। তুমি বরং সন্ধায়ই আসো। গুরুত্বপূর্ণ কথা আছে।”

বনবিবি ও জঙ্গলি শাহ'র উপাখ্যান

বঙ্গের দক্ষিনাঞ্চলে তখন নিষ্ঠুর রাজা দক্ষিন রায়ের রাজত্ব। খোদা চাইলেন প্রতিনিধি পাঠিয়ে দক্ষিন রায়কে শায়েস্তা করবেন, কিন্তু কীভাবে পাঠাবেন ভেবে পাচ্ছেন না। অ্যামনি এক সময় মক্কায় ইব্রাহীম নামক এক সন্তানহীন দরবেশ তার স্ত্রী ফুলবিবির সম্মতি ও বিশেষ শর্তে বিয়ে করেন গুলাল বিবিকে। খোদা গুলাল বিবিকে বেঁছে নিলেন তার প্রতিনিধির জন্মদাত্রী হিশেবে। তবে সামান্য সমস্যা দ্যাখা দিলো, ফুলবিবি'র শর্ত অনুযায়ী গর্ভধারণের পরপরই গুলাল বিবিকে জঙ্গলে একা রেখে আসা হলো। 

আমাদের এলাকায় ঘটে যাওয়া কিছু ভৌতিক ঘটনা

ভূত-প্রেতের ভয় কোনোদিনই ছিলনা, এইরকম মানুষ খুঁজে পাওয়া ভার। পূর্নিমা অথবা অমাবশ্যার রাতে হাট-বাজার থেকে ফিরতে গিয়ে ভূত দেখে মরে গেছে, এইরকম ঘটনা আমরা সবাইই কম-বেশি শুনি। ছোটবেলায় আমার ভূত-প্রেত বিষয়ে ব্যাপক আগ্রহ ছিল। আমি ছোটবেলায় সব’চে বেশি ভূতের গল্প শুনেছি আমার বাবা আর দাদীর মুখে। এছাড়াও অনেকের মুখেই শুনেছি। তখন আমি এসকল গল্প শুনে কখনো অবিশ্বাস করিনি। সবকিছুই সত্য ভেবেছি। আমার অন্যান্য পরিচিতদের কাছেও শুনেছি অনেক ঘটনার বিবরন। সেইসব ঘটনারই কিছুটা বলবো। যার একটা ঘটনা ছাড়া, বাকী সবগুলো ঘটনাই আমাদের এলাকায় ঘটে গেছে। 

এক সপ্তাহের গল্প

শনিবার,
- হ্যালো! কই তুমি?
- যেখানে শব্দেরা থেমে যায়, আমি একা।
- মানে কী?
- যেখানে দেখার কেও নেই।
- কাব্যগিরি মারাইবা না! সোজা-সাপ্টা উত্তর দাও। কই তুমি?

রম্যগল্প : যেদিন গার্লফ্রেন্ডের মা-কে ডার্লিং বলেছিলাম

হ্যালো! হ্যালো হ্যালো! হ্যালো দোস্ত! হ্যালো সকাল!

সাত-সকালে এভাবে ফোন দিয়ে বিরক্তি করার কোন মানে হয়না। মোবাইলের লাল বাটনটা কিছুক্ষণ চেপে ধরে রাখলাম। মোবাইল বন্ধ হয়ে গেল। শালা এত সকালে কল দিয়ে সকাল বেলার মজার ঘুমটাই নষ্ট করে দিল। কাথা মুড়ি দিয়ে আরও কিছুক্ষণ ঘুমানোর চেষ্টা করলাম। নাহ! বিরক্তি লাগছে। বারান্দায় গিয়ে দাঁড়ালাম।

সায়েন্স ফিকশন : দূর্ধর্ষ নিহা'র প্রেমানুভূতি চিপ চুরি

হিজিবিজি কি-সব লেখা দ্বিমাত্রিক নাশপতি আকৃতির বক্স থেকে ইলেক্ট্রিক চিপ-টা চুরি করার আগপর্যন্ত আমি দুঃস্বপ্নেও কল্পনা করিনি কতোটা ভয়ানক আর রোমাঞ্চকর পরিস্থিতিতে পড়তে যাচ্ছি। গত মৌসুমে সামরিক কারখানা থেকে অদৃশ্য-হওয়ার-চাদর পর্যন্ত চুরির রেকর্ড আছে আমার, তখনো এরকম রোমাঞ্চ অনুভব করিনি। অবশ্য এরকম কিছু ঘটতে পারে চিন্তা করেই চুরির সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম নতুন একধরণের অনুভূতি লাভের আশায়।